আপনার ভালোবাসার মানুষটি প্রতারণা করছে না তো?
কাওকে ভালো লাগলো, প্রপোজ করলাম! রাজী হয়ে গেল! দুম করে ভালোবাসা হয়ে গেলো। ব্যাস!! এখানেই কিন্তু শেষ নয় ভালোবাসা। বরং শুরু, প্রথম দিকটা মিষ্টি-মধুর, একটু চাহনী, চোখে চোখ পড়, দুরু দুরু বুকে কথা বলা! আর উত্তর হ্যা হলে তো, স্বর্গরাজ্যটা যেন উঁকি মেরে আসা। তার কিছুদিন পরই ভালোবাসার প্রথম শিহরণটা যখন কমতে থাকে, ভালোবাসায় তখন অভ্যস্ততা চলে আসে, অনেকেই সেটা মেনে নিতে পারেনা। তখন মনে ঢুকে নানান সন্দেহ। আর যা সম্পর্ক করে বিষাক্ত। প্রথমেই বলে রাখি। মানুষ পরিবর্তনশীল। নানা রকম চাপে মানুষের ব্যবহারে পরিবর্তন আসে। এখানের দুয়েকটি পয়েন্টের সাথে মিলে গেলেই যে তিনি আপনাকে ধোঁকা দিচ্ছে তা নয়! বরং আরো কিছুদিন দেখুন। না রেগে ঠান্ডা মাথায় সরাসরি কথা বলুন। এগুলো নানান মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সাধারণ জরিপ। কিন্তু একেক জনের ক্ষেত্রে এটি একেক রকম। বাস্তবিক ক্ষেত্রে ভালোবাসা অনেক জটিল একটি বিষয়। তবে এটি পড়ে অন্তত নিজের দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন, যে আপনার কি কি আচরণ, আপনার সঙ্গীকে সন্দেহ করবার পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে, তো আসুন জেনে নেই কিছু সাধারণ তথ্য , কিভাবে বুঝবেন আপনার ভালোবাসার মানুষটি প্রতারণা করছে কিনা?
– যখনই আপনি তাকে সন্দেহ করবেন।সে আপনাকে অনুভব করাবে যে দোষটি আপনার।অথবা এমন কিছু বলবে, যাতে আপনি নিজেই নিজেকে এর জন্য দোষী ভাবতে থাকবেন। যেমন ধরুন, আপনি তাকে দেখলেন, অন্য কারো সাথে অন্তরঙ্গ সময় কাটাতে। পরদিন হয়তো জানতে চাইলেন, যে সে কি করছিলো তখন, হয়তো ব্যপারটা সাধারণ। বন্ধু, বা আত্নীয় স্বজনও হতে পারে। কিন্তু উলটো আপনি তাকে সন্দেহ করছেন বলে আপনার সাথে রাগারাগি করে বুঝতে হবে হয়তো সেখানে কিছু একটা ঝামেলা আছে। সেই সময়টুকু চুপ থাকুন।পরে ধীরে-সুস্থে ব্যপারটা চেখে দেখুন।
– ফেসবুক এবং নানা সোস্যাল নেটওয়ার্কে আপনার সাথে প্রাইভেসি রক্ষা এবং সম্পর্কের কথা জানান দিতে অস্বীকার করে। এবং পাসওয়ার্ড জানাতে চায়না!
-প্রায়ই ফোনে ব্যাস্ত থাকে, এবং তার যথাযোগ্য ব্যাক্ষা দিতে ব্যার্থ্য হয়।
– নিজের বন্ধু-বান্ধবী এবং পরিচিতদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় না।
-ভালোবাসার সম্পর্কে একটু আকটু ঝগড়া বিবাদ থাকবেই। কিন্তু দোষ যারই হোক। সবসময় যদি আপনাকেই ক্ষমা চাইতে হয়, এবং নিজ দোষ স্বীকার করে নিতে হয়
তবে থামুন। এর কারণ হয়তো, সম্পর্ক নিয়ে তার খুব একটা মাথাব্যথা নেই। তবে একটা কথা বলে রাখা ভালো,অনেকেরই ইগো থাকে, কখনোই সেটাকে প্রতারণার সাথে মেলাবেন না।
– যদি সে আপনার সাথে আগের মত কথা না বলে, নিজের সমস্যা বা কোনো ঘটনা বলতে না চাওয়া হয়তো বা আপনাকে আর ভালো না লাগার লক্ষণ হতে পারে। তবে অনেকেরই মানসিক চাপে নানান পরিস্থিতির মুখে পড়ে। কিন্তু এটি যদি হঠাৎ করে শুরু হয়ে স্থায়ী হয়ে যায়, তবে মনে করুন, তিনি আপনার সাথে দুরত্ব বজায় রাখতে চান।
– ভালোবাসার প্রকাশ বিষয়ক বোধগুলো কমে যায়। “অনেক ভালোবাসি” থেকে তারা বন্ধু শব্দটি উচ্চারণ করতে থাকে বেশী বেশী । আস্তে আস্তে দূরত্ব বাড়তে থাকে। কিন্তু তা কমানো নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা থাকে না।
– বন্ধু-বান্ধব, চাকুরী, পড়াশোনা অথবা কম্পিউটারের পেছনে সাধারণের চেয়ে একটু বেশীই সময় ব্যায় করা।
অনেক সময় চাকুরী বা পড়াশোনার চাপ বেড়ে যায়। তখন সময় একু বেশী ব্যায় করতেই পারে। কিন্তু আপনার কোনো কথার তোয়াক্কা না করে অনেকটা জোর করেই ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়া হয়তো খুব একটা সুখকর না আপনার সম্পর্কের পরিণতির জন্য।
-হঠাৎ করেই যদি আপনার ভালোবাসার মানুষটির প্রাইভেসির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়।
-ফোনে অনেক বেশী ব্যাস্ত থাকা। এবং তা লুকাতে চাওয়া। কারণে অকারণে ফোন অফ বা ওয়েটিং কল পাওয়া। আপনার সাথে কথা বলার হার কমে যাওয়া এবং খুব বেশীই ব্যাস্ততার মাঝে থাকা।
-হঠাৎ করে উদভট সব সমস্যার অজুহাত বের করা।
– কথায় কথায় “আমার একটু সময় দরকার বা আমার নিজেকে নিয়ে আরেকটু ভাবা দরকার”, এধরণের কথা বলা।
– তুলনামূলক ভাবে ফ্লারটিং বা অন্যদের সাথে রসাত্নক আলাপে মেতে উঠা।
– কোনো বিশেষ একজনের ব্যপারে অনেক বেশী কথা বলা, বা অনেক বেশী এড়িয়ে যাওয়া এ দুটি’ই সন্দেহের উদ্রেক করতে পারে।
– মোবাইলে অনেক বেশী টাকা ঢুকানো এবং আপনার সাথে কম কম কথা বলা।
– তার বন্ধুদের আপনার প্রতি আচরণ বদলে যাওয়া ( হয়তো তারা জানে, অথবা তাদের বলা হয়েছে, কতোটা বাজে আপনি তার সাথে, যেমন আপনাকে তাদের সামনে দোষী হিসেবে তুলে ধরা)
– আপনার কাছ থেকে হঠাৎ করেই মতামত বা উপদেশ চাওয়া বন্ধ করে দেয়া।
-আপনাকে না জানিয়ে নতুন কোনো মোবাইল নাম্বার, ইমেইল আ্যড্রেস বা ফেসবুক আ্যাকাউন্ট খোলা।
– হঠাৎ করেই নিজের সৌন্দর্য্যের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়া।
– কল আইটেমস ডিলিট করে ফেলা।
– ভালোবাসা নিয়ে অনেক দার্শনিক ধরণের প্রশ্ন বা গল্পের উথাপন করা।
– হঠাৎ করেই চাকরীতে ওভারটাইম শুরু করা, কিন্তু বেতনের খাতায় কোনো এক্সট্রা বেতন যোগ না হওয়া।
– ভালোবাসার সম্বোধন বা ছোঁয়া, জড়িয়ে ধরা হঠাৎ করেই কমে যাওয়া।
-আপনি একটু ব্যাস্ত হতে থাকলেই সে ফোনে বা অন্য কাজে ব্যাস্ত হতে থাকে
-হঠাৎ করেই আপনার উপর অনেক বেশী মনযোগ দেয়া, যা আগে হতো না। এর কারণ অপরাধবোধ বা গিলটিনেস।
-হঠাৎ বলে বসা “তোমার কি মনে হয়, কোনো কিছু ভুল হচ্ছে?” এক্ষেত্রে ইগনোর না করে, ভালো করে শুনুন তিনি কি বলতে চান ।
-কথায় কথায় ভুল ধরা, এবং আপনার দোষ খুজে বের করা। যা আপনার সাথে ঝগড়া বা বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
-কথায় সম্পর্ক ভাঙ্গার কথা বলা। আপনাদের ছোটখাটো ঝগড়ার মাঝেও “তুমি কি আর আমাকে সহ্য করতে পারছো না?” বা “তুমি কি ব্রেকআপ চাও নাকি?” ধরণের কথা বলা।
-কথায় কথায় “আমি না থাকলে তুমি কি করবে?”, “আমাদের মাঝে যদি কখনো কিছু হয়! তুমি সবসময়ই আমার খুব ভালো বন্ধু থাকবে” ধরণের কথা বলা।
-হঠাৎ করেই খুব বেশী আত্নসচেতন এবং নিজের স্বকীয়তা বজায় রাখা বা স্বাধীণতার কথা বলা।
-অনেকাংশে আপনি তার জন্য বিশেষ কিছু করলে সে দুঃখিত বোধ করে, কারণ তা তাকে মনে করিয়ে দেয়, যে সে আর আপনাকে ভালোবাসে না, বা আপনার সাথে প্রতারণা করছে।
-এক্ষেত্রে বন্ধুরা অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আপনার সামনে সে হয়তো যেরকম অভিনয় করে যাচ্ছে, বন্ধুদের সামনে নয়। এবং এসময় আপনার চেয়ে অন্য বিশেষ কাওকে নিয়েই হয়তো তার গল্প সবসময় থাকে তার মুখে, বন্ধুদের সাথে। দুজনের মিউচুয়াল কোনো বন্ধু থাকলে তার সাহায্য নিতে পারেন।তবে অনেক সাবধাণে, কারণ এতে হিতে বিপরীতের সম্ভাবনা থাকে।
এর দুয়েকটি মিল থাকতেই পারে বিচিত্র নয়। কিন্তু অনেক বেশী মিল থাকলে ভাবার বিষয়। আর অনেকেই আছি। বুঝতে পেরেও চেপে যাই। সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে। তাদের বলছি, ওনি যদি সত্যিই প্রতারণা করে থাকেন। তবে আজ হোক, কাল হোক সম্পর্ক ভাঙ্গবেই বরং আপনার অবহেলা এর পেছনে দায়ী থাকতে পারে।অতএব মনের ভিতর পুষে না রেখে খোলাখুলি কথা বলুন। মনে রাখবেন কারো উপর দোষ চাপাবেন না।তাকে শান্ত ভাবে বলুন, প্রশ্ন করুন। তিনি রেগে উঠলেও শান্ত হোন। বুঝান কেন তার এমন মনে হচ্ছে। তিনি যদি সত্যিই প্রতারণা করে থাকেন রেগে কথা বন্ধ করে দেবেন। আর নাহয় তিনি মেনে নিবেন, তবে তাকেও বলা সুযোগ দেবেন। অনেক সময় খোলাখুলি কথা বলায় সম্পর্ক ঠিকও হয়ে যায়।আর কখনোই নিজের সঙ্গীকে অবহেলা করবেন না। তা বরং তাকে দূরে যাবার পথ করে দেয়। কখনোই এক পক্ষকে দায়ী করবেন না। নিজের কোনো ভুল তাকে দূরে যেতে বাধ্য কে কিনা তাও ভেবে দেখবেন।
[ ভাল লাগলে পোস্ট এ অবশ্যই লাইক দিবেন , লাইক দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই লাইক দিবেন । ]
Leave a comment