যশোরের নওয়াপাড়ায় তুষ দিয়ে প্রতিদিন ৪শ’ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে
বেনাপোল প্রতিনিধি- যশোরের নওয়াপাড়ায় তৈরী হচ্ছে তুষ দিয়ে ৪শ’ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ। এ বিদ্যুৎ একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করে প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। ফার্নেস ওয়েল দিয়ে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টগুলো এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা না রাখতে পারলেও বেসরকারীভাবে এ প্রথম তুষ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরীর মাধ্যমে চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা করেছে।
উপজেলার মশরহাটিতে একজন সফল শিল্প উদ্যাক্তা মোঃ আনিসুর রহমান ব্যক্তিগতভাবে গড়ে তুলেছেন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। তার শিল্প প্রতিষ্ঠান এ রহমান পরশ অটো রাইস মিলে উন্নতমানের চাল মাড়াই করার পর তুষ দিয়ে তৈরী করছেন এ বিদ্যুৎ। ২০১১ সালের ৮ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ তৈরীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন হয় এবং লাখ লাখ টাকা বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় করে চলেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় গড়ে উঠা এ রহমান পরশ অটো রাইস মিলটি ধান মাড়াই করার সময় তুষ অটোমেটিক মেশিনের মাধ্যমে বয়লারে চলে যায়। সেই তুষ বয়লারে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারের পর সেখানে স্টিম তৈরী হয়। স্টিমের প্রেসার থেকে টারবাইনের মাধ্যমে এ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এখানে ৪শ’ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। মেশিনারী ক্রয় কষ্ট ও ব্যাংক সুদসহ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে ২ টাকা ৬০ পয়সা।
বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ভ্যাটসহ ৬/৭ টাকা। এ মিলের চাহিদার প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ এখান থেকে পূরণ করা হয়। তুষ দিয়ে তৈরী বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ওই শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিন ১১,৩৪০ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। সেই হিসেবে ২৬ দিনের কর্ম দিবসের প্রতি মাসে সাশ্রয় হচ্ছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৮ শ’ ৪০ টাকা। নিজস্ব উদ্যোগে তুষ দিয়ে তৈরী বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ সাশ্রয় করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, পাশাপাশি চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের উদ্যোক্তা এ রহমান অটো রাইস মিলের মালিক আনিসুর রহমান জানান, বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলার জন্য সকল শিল্প মালিকরা আমার মত করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে পারেন। এ ধরনের বিদ্যুৎ উদপাদন উৎসাহিত করতে উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণসহ উপকরণাদি সহজশর্তে সরবরাহ করার জন্য সরকারীভাবে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা একান্ত প্রয়োজন।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর নওয়াপাড়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ শাহাজান কবীর জানান, সকল আটো রাইস মিলগুলোতে তুষের ব্যবহার রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে যদি ওই রাইস মিলগুলোর মালিকরা এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলে আর্থিকভাবে তারা যেমন লাভবান হবেন, পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ চাষাবাদে সরবরাহ করে কৃষিতে উল্লেখযোগ সাফল্য বয়ে আনবে।
Leave a comment