• hi

পতিতাপল্লী, তবে তাহাদের কথা একটু বলি – কে দেখবে তাহাদের ওষুধ প্রশাসন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিরব, গভীর ঘুমে নিমগ্ন।

hi

৫ এপ্রিল ২০১০ দি গ্রার্ডিয়ানে প্রকাশিত জনা মুরহেড এর বাংলাদেশী সেক্স ওয়ার্কার অর্থ্যাৎ পতিতাদের নিয়ে গবেষনাধর্মী লেখাটি পড়ে কিছুটা বিস্মিত হলাম। কারন ২০০৯ সালে মাসিক গণস্বাস্থ্য পত্রিকায় স্টেরয়েড ওষুধ খাইয়ে গরু মোটা তাজা করার একটি ফিচার লিখেছিলাম।

একই ওষুধ যখন একই উদ্দেশ্যে মানুষ ব্যবহার করছে তখন আতংকিত না হয়ে উপায় আছে। প্রশ্ন হলো কেনো সেক্স ওয়ার্কাররা এ ধরনের একটি ওষুধ বেছে নিলো এবং খাওয়া শুরু করলো?
উত্তর হিসেবে যা জানা গেলো তা রীতিমতো বিস্ময়কর। বাংলাদেশের সেক্স ওয়ার্কাররা মুলতঃ সুন্দর চেহারা, শরীর, মোটা তাজা রাখার জন্য এই স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ যার ব্রান্ড নাম হচ্চে ওরাডেক্সন ব্যবহার করে থাকেন। টাঙ্গাইলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহত্তম পতিতালয়ের ১৬ বছর বয়সের মেয়ে ময়নাও জানে কেনো স্টেরয়েড ওষুধ খেতে হয়। বাংলাদেশের পতিতাদের মধ্যে বেশরিভাগ পতিতা হচেছ অল্প বয়সী। নিয়মিত হারে অতিমাত্রায় স্টেরয়েড সেবনের কারনে এসব মেয়েদের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

তারপরেও ওষুধ প্রশাসন নিরব। ওরাডেক্রন ট্যাবলেট উৎপাদনকারী কোম্পানী নুবিস্তা (পূর্বে নাম ছিলো ওরগানন) নিশ্চুপ, ভাবখানা এরকম ব্যবসাতো ভালোই হচ্ছে। অথচ প্রেশক্রিপশন ছাড়াই কিভাবে এ ওষুধটি বিক্রি হচ্ছে তা দেখার দায়িত্ব্য ছিলো কোম্পানীর এবং ওষুধ প্রশাসনের। বিবিসি ওয়াল্ড সার্ভিসে এ ধরনের রির্পোট গুরুত্বের সাথে সম্প্রচার হলেও আমাদের মিডিয়া নিরব ভুমিকায়। আমাদের মিডিয়া অধিপতিদের ভাবখানা এ রকম – ওসব বেশ্যাদের নিয়ে ফিচার চাপানোর কি আছে ? কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমাদের জরুরী ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে এ ধরনের ওষুধ প্রেশক্রিপশন ছাড়া কোনভাবেই বিক্রি যাতে না হয়। ওষূধ কোম্পানীকে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে যাতে জীবন রক্ষাকারী এ ওষুধের অপব্যবহার খুব দ্রুত বন্দ হয়।

জনা মুরহেড এর ধারাভাষ্য অনুযায়ী, আমি পতিতালয়ের নতুন রং করা বারান্দা দিয়ে হেটে যাচ্চিলাম ঠিক তখন অল্প বয়সের কয়েকজন মেয়ে আমার নজর কাড়লো। তারা আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো, খুব সুন্দর করে হাসলো। তারা দেখতে ছিলো আমাদের মেয়েদের মতো যাদের বয়স ১৫ এবং ১৭। পতিতালয়ে নতুন অতিথি দেখে মেয়েগুলো দ্রুত সেজে নিলো। দেখতে অল্প বয়সী হলেও এই মেয়ে গুলো অনেক সুন্দর। এদের চোখে এখনও তারুন্যের স্বপ্ন খেলা করে, এরা এখনও অনেক উচ্ছল, বর্ণিল যা প্রতিদিন আমার বাড়ীতে আমার মেয়েদের মধ্যে দেখতে পাই। এভাবেই টাঙ্গাইলের পতিতালয় ঘুরে এসে ছুটলাম ফরিদপুরে আরেকটি পতিতালয়ে। পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত এই পতিতালয়ের মেয়েরা এই ওষুধ ব্যবহার করে আসছে খদ্দের ধরার আসায়।

প্রতিদিন এই মেয়েরা প্রায় ৫ থেকে ৬ জন পুরুষের সাথে মিলিত হয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এখানে আসা পুরুষরা অল্প বয়সী মেয়েদের খুব পছন্দ করে। অল্প বয়সী মেয়েদের দেহ বিনিময়ের রেটও একটু বেশী। প্রতিবার দেহ বিনিময়ের জন্য এখানে আসা পুরুষদের দিতে হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বেশীরভাগ যৌন কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেলো তারা প্রায় সবাই তাদের প্রাপ্য টাকা সমানভাবে পায় না। পতিতালয়ের মালিক মাসি, স্থানীয় পুলিশদের কাছে এরা জিম্মি। কারন যৌন কর্মীদের প্রতিদিনের আয় করা টাকার একটি অংশ মাসি, পুলিশের হতে চলে যায়। টাঙ্গাইল এবং ফরিদপুর দুটি পতিতালয়ের অবস্থা অনেক নাজুক, অস্বাস্থ্যকর। চিকন সরু গলির ভিতর ঘুটঘুটে অন্ধকারের ভিতর প্রায় ৮০০ যৌন কর্মী এখানে কাজ করে। একরুম এবং দুইরুম বিশিষ্ট রুমে যৌন কর্মীরা থাকেন। এক বেডে দুজন যৌন কর্মী থাকেন। যখন কোন একজনের খদ্দের জুটে যায় তখন আরেকজনকে বাহিরে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এসব যৌন কর্মীদের খদ্দেররা সবাই ভ্রাম্যমান। স্থানীয় বিভিন্ন কারখানায় কাজ করে কিংবা দূর থেকে আসা খদ্দেররা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অল্প শিক্ষিত ট্রাক ড্রাইভার, ইট কারখানার শ্রমিক, গার্মেন্টস শ্রমিক কিংবা পাড়ার বখাটে যুবক শ্রেনীর লোক।

জনা মুরহেড এই প্রতিবেদন তৈরী করার সময় কয়েকজন বাংলাদেশীকে প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলাদেশ মুসলিম দেশ হওয়া স্বত্তেও কিভাবে এদেশে পতিতালয় গড়ে ওঠে। জনৈক বাংলাদেশীর কৌশলি উত্তর ব্রিটিশ আমলে এদেশের আনাচে কানাছে এসব পতিতালয় গড়ে উঠেছে। তারপর সমাজের এক শ্রেনীর প্রয়োজনে এসব পতিতালয় এখনো টিকে আছে। এসব পতিতালয়ে প্রবেশ করলে এখানকার সার্বিক অবস্থা দেখলেই এখানকার অবস্থা সম্পর্কে টের পাওয়া যায়। পতিতালয়ের বারান্দা দিয়ে হেটে গেলে শোনা যায়, দড়জা বন্দ ঘরে এক বৃদ্ধ এক তরুনী পতিতাকে নিয়ে মেতে আছে, মাঝে মাঝে খুক খুক করে কাশি দিচেছন। সামনে যেতেই দেখা গেলো মুখে দাড়ি নিয়ে এক যুবক এক পতিতার ঘরে প্রবেশ করে দড়জা বন্দ করে দিচ্ছেন। সামনে যেতেই চোখে পড়লো কনডমের স্ত্তপ, খালি পেকেটে ইত্যাদি। বারান্দা দিয়ে আরেকটু যেতেই অল্প বয়সী মেয়েটিকে দেখে আমার মেয়েটির কথা খুব মনে পড়লো। যে বয়সে আমার মেয়েটি স্কুলে যাওয়া আসা করে সে বয়সে এ মেয়েটি টাকার বিনিময়ে দেহ বিক্রি করে।মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। আমি তাদের সাথে কথা বলতে গেলাম। ভাষা সমস্যা হয়ে দাড়ালো। কথা বলা হলো না। কিছুক্ষন পরই আরেকজন এসে দাড়ালো। তাকে দেখে আমার ছোট মেয়েটির কথা মনে হলো। কারন এই মেয়েটির বয়স ১২ এর বেশী হবে না কিন্তু এই বয়সে মেয়েটিকে এরকম বর্বর পেশা বেছে নিতে হলো। আমার সাথে থাকা ফটোগ্রাফার আসলো এবং মেয়েটিকে বাংলায় বললো – তোমার বয়স কতো হতে পারে? সে বললো তার বয়স মাত্র ২২। আমার বিশ্বাস হলো না। আমি তাকে আবার দেখলাম, দূর্বল স্তন্নের দিকে তাকালাম। মেয়েটিকে আমার অল্প বয়স্কই মনে হলো। প্রিয় পাঠক, এই হচেছ আমাদের দেশের দুটি বিখ্যাত পতিতালয়ের গল্প।
চলুন এবার আমরা শুনাবো, একটি ভৌতিক গল্প যা শুনলে আপনাদের শরীর শিউরে উঠতে পারে। আমরা ওরাডেক্রন নামে একটি ওষুধের কথা বলবো যা ব্যবহার করে সাড়া ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশের এই স্বল্প শিক্ষিত পতিতারা। অধিক দামের আশায় কুরবানীর সময় এ দেশের কৃষকরা সাধারনত গরু মহিষকে এ ধরনের মোটাতাজা করনের ওষুধ খাইয়ে থাকেন।
ওরাডেক্রন হচেছ ব্রান্ড নাম, এর জেনেরি নাম হচেছ ডেক্রামিথাসন যা জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে শরীরে তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রাননাশ হতে পারে। টাঙ্গাইলে ও ফরিদপুরের পতিতালয় ঘুরে দেখা গেলো এখানকার প্রায় সবাই শরীরের ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য এবং খদ্দেরদের চাহিদা পুরন করার জন্য সর্দারনিদের চাপে পড়ে ওরাডেক্রন ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু এরা কেউ জানেনা এই ওরাডেক্রন ওষুধ খেলে কি ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিন্তু এরা জানে এই ওষুধটি খেলে শরীর ফুলে ওঠে, দেখতে স্বাস্থ্যবান মনে হয়।

তথ্যঃ বিভিন্ন গবেষনা ও দি গার্ডিয়ান এবং বিবিসি থেকে
http://news.bbc.co.uk/2/hi/world/south_asia/10173115.stm

ফেসবুকে আমি

 [ ভাল লাগলে পোস্ট এ  অবশ্যই লাইক দিবেন , লাইক দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই লাইক দিবেন । ]


Leave a comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।


*


hi
online partners namaj.info bd news update 24 Add

Read previous post:
মানিয়ে চলুন প্রেমিকাকে

বান্ধবী, প্রেমিকা বা সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীর মন খারাপ। কোনো কারণ ছাড়াই হঠাত্ বিষণ্ন হয়ে আছেন তিনি। কেন এমনটা হয়, হচ্ছে, ভেবে...

Close