• hi

কৃত্রিম রক্ত আবিষ্কার !

hi

বিশ্বে সুস্থ রক্তদাতার সংখ্যা দিন দিন কমছে। অনেক সময় অপারেশন শেষে রোগী সুস্থ হয়ে ফিরতে না ফিরতেই আক্রান্ত হয় অন্য কোনো রোগে। যার কারণ দাতার রক্ত থেকে আসা ভাইরাস। রক্ত বেশি দিন সংরক্ষণ করাও যায় না। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ দিনের মতো রাখা যায়।এত সব সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানীরা অনেক বছর ধরেই রক্তের বিকল্প আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আর অতিসম্প্রতি গবেষকরা কৃত্রিম রক্ত আবিষ্কারের পথে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছেন। শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় রক্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়া। দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর বড় সমস্যাটি হচ্ছে, রক্তক্ষরণের কারণে দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। রক্তের হিমোগ্লোবিন এই অক্সিজেন বহন করে এবং এর কারণেই রক্ত লাল হয়। হিমোগ্লোবিনের মতো একটা কিছু তৈরি করাটাই তাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।গবেষকরা জানালেন, গরু, উদ্ভিদ এমনকি ফাংগাস থেকেও হিমোগ্লোবিন সংগ্রহ করা যেতে পারে। রক্তের যে বিশেষ উপাদানের কারণে একেকজনের রক্তের গ্রুপ একেক রকম হয়ে থাকে তা হিমোগ্লোবিনে থাকে না। তাই একই হিমোগ্লোবিন সব রোগীর দেহে দেওয়া যেতে পারে। সাধারণ তাপমাত্রায় এটি দীর্ঘকাল সংরক্ষণ করা যাবে। পরিবহনেও থাকবে না ঝামেলা।

এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রির অধ্যাপক ক্রিস কুপার বলেন, ‘কৃত্রিম রক্তটি দেখতে অনেকটা দানাদার হতে পারে। যা ব্যবহারের সময় কোনো একটি রাসায়নিক দ্রবণের সঙ্গে মেশাতে হবে।’ যে গবেষক দল অতিসম্প্রতি আবিষ্কৃত কৃত্রিম হিমোগ্লোবিনের পেটেন্ট জমা দিয়েছেন, তাদেরই একজন হচ্ছেন কুপার।
ব্রিটেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, হল্যান্ড, ইতালি, সুইডেন ও হাঙ্গেরির গবেষকদের নিয়ে এই প্রজেক্টটি দুই বছর আগে শুরু হয়েছিল। প্রজেক্টে ব্রিটিশ সরকারের বায়োটেকনোলোজি অ্যান্ড বায়োলোজিক্যাল সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সের গবেষণা কাউন্সিল অর্থায়ন করছে। সত্যি বলতে রক্তের বিকল্প অনুসন্ধান করা ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২০ বছরে এই খাতে দশ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছে।

কৃত্রিম রক্ত আবিষ্কারের আগের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। অন্যান্য প্রাণীর উপর পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল সে সব কৃত্রিম রক্ত প্রাণীর শরীরে উল্টো দূষণ ঘটাচ্ছে। তবে সে সব কৃত্রিম রক্তের প্রথম দিককার উপাদানগুলোতে এমন সব রাসায়নিক পদার্থ ছিল যা কিনা পারমাণবিক বোমা বানাতে ব্যবহৃত হয়!

শরীরের মধ্যে অক্সিজেন পরিবহন করার সময় হিমোগ্লোবিন সাধারণত কালচে লাল রং ধারণ করে। এটি দূষিত হলে এর মধ্যে থাকা লোহা অক্সিডাইজড হয়ে যায় (অনেকটা মরিচা পড়ার মতো)। তখন এটি অকার্যকর বাদামি বা সবুজ একটি রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে। কুপার জানালেন, ‘কৃত্রিম রক্তে হিমোগ্লোবিনের দূষিত হওয়ার প্রবণতা কমবে; কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পেঁৗছে দেয়ার কাজটি সাধারণ রক্তের মতোই করতে পারবে।’

‘বায়োপিউর’ নামে একটি আমেরিকান কোম্পানি এরই মধ্যে ‘হেমোপিউর’ নামে একটি কৃত্রিম রক্ত তৈরি করেছে। এটি দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা করলেও যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপে বাজারজাত করার লাইসেন্স পায়নি। এতে গরুর রক্তের হিমোগ্লোবিন ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ কি না তাও প্রমাণিত হয়নি।
এদিকে মার্কিন গবেষকরা কৃত্রিম রক্ত তৈরির আরেকটি উৎস পারফ্লুরোকার্বন নিয়ে গবেষণা করছেন। যা প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন দ্রবীভূত করতে পারে। এটি যেমন সস্তা, তেমনি এর উৎপাদনেও ঝামেলা নেই। তবে কিছু সমস্যার কারণে এটি এখনো ব্যবহারযোগ্য হয়নি।


Leave a comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।


*


hi
online partners namaj.info bd news update 24 Add

Read previous post:
৭০০০০ শিশু এইচআইভি আক্রান্ত

নাইজেরিয়ায় প্রায় ৭০ হাজার শিশু এইচআইভির জীবাণু নিয়ে জন্মেছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার ন্যাশনাল এজেন্সি ফর দ্য কন্ট্রোল অব এইডস...

Close