বিয়ে নয়, সহবাস
কথায় আছে, জন্ম-মৃত্যু আর বিয়ে নাকি একেবারে ওপর থেকে নির্ধারিত। মানে কেন হচ্ছে না, কবে হবে- এ নিয়ে কাঁদুনি গেয়ে লাভ নেই। ঈশ্বর নামের সেই অলৌকিক পুরুষ (?) বিবাহের সুতো যার সঙ্গে এবং যবে ঠিক করে রেখেছেন, তবেই তার সঙ্গে হবে। এ নিয়ে অযথা মাথার চুল ছিঁড়ে কোনও লাভ নেই।যেদিন থেকে মানুষ-সমাজ বুঝেছে, ইভের আপেল খাওয়ার স্বীকৃতি পেতে বিবাহ নিয়ে তাই মাতামাতি কাণ্ড শুরু করেছে। কল্লোল যুগের বিবাহযোগ্য তরুণরা নাকি ডবল বেড খাট অর্ধেক করে বিবাহেচ্ছা জানান দিত। তৎপরবর্তী ৯০-এর দশকে নারী যখন লজ্জাকে আবরণ থেকে আভরণে পরিণত করছে, তখন নিজেরাই প্রেমিকের নাম ম্যাট্রিমনিতে দিয়ে সেই বিজ্ঞাপন পরিবারের সামনে পেশ করত। মোট কথা ঈশ্বরকে বেমালুম ভুলে মেরে দিয়ে বিয়ে নিয়ে পাগলামি বাড়ির লোককে তিষ্ঠোতে দিত না।
এ ব্যাপারে সেই যুগকে টেক্কা দিয়েছে জেন ওয়াই। যতই নাস্তিক-উচ্চিঙ্গে-অপসংস্কৃতিবান বলে এই জেনারেশনকে অপবাদ দেওয়া হোক, এই একটি ব্যাপারে কিন্তু সারমর্ম বুঝে নিয়েছে তারা। সে কারণেই বিয়ে নয়, বরং ‘ইয়ে’ নিয়েই বেশি মাথাব্যথা জেন ওয়াইয়ের। সময় হলে বিয়েটাও নিশ্চয় হবে- ধরে নিয়েই ফলের চিন্তায় (এক্ষেত্রে ইভের আপেল) মগ্ন তারা। বয়স পেরিয়ে গেলেও কবে বিয়ে হচ্ছে, সে প্রশ্নে যথেষ্ট বিরক্ত হয় জেন ওয়াই। কারণ, বিয়ের মাধ্যমে শরীর শরীর খেলার সামাজিক স্বীকৃতির প্রতি এত নির্লিপ্ত এ প্রজন্ম যে, বিয়ের নাগপাশে ধরা দিতে তারা বিশেষ রাজি নয়।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ইত্যাদি মার্কা হেডলাইন খবরের কাগজে প্রায়শই চোখে পড়ে। এতে কিন্তু ঘোর আপত্তি আছে জেন ওয়াই-এর। কোনও গায়ের জোর না। একেবারে সহমত পোষণে শুধু সহবাসে সাধটুকু মেটাতে রাজি ইয়ং বং। ‘বিয়ে মানে কী? দুজন মানুষকে একটা সামাজিক নিয়মে বেঁধে দেওয়া। যার মাধ্যমে তারা নিজেদের সেক্সুয়াল চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পারিবারিক কিছু দায়, মোরওভার নেক্সট জেনারেশনের দায়িত্ব নিয়ে থাকে। বিয়েটা আমার কাছে আদৌ কোনও সম্পর্ক নয়। সামাজিক চাপ। এই চাপ নিতে আমি বা আমরা পাতি রাজি নই। মানে আমার মনে হয় না, সম্পর্ক বা ইচ্ছে মেটানোর জন্য কোনও ধরনের স্বীকৃতিরই প্রয়োজন আছে। জোর করে চাপিয়ে দিয়ে তো কিছু হয় না। বয়স অনু্যায়ী আমার একটা সেক্সুয়াল চাহিদা আছে। সেটা মেটানোর জন্য বিয়ে কেন করতে যাব? বিয়ে মানেই তো হাজারও জটিলতা, কমিটমেন্ট। আমি নিজেকে জানি। মন তার ইচ্ছে অনু্যায়ী বদলায়। তাই বিয়ে বা লিভ ইনের কমিটমেন্ট মানে একটা অনিশ্চয়তা। তার চেয়ে পছন্দের মানুষের সঙ্গে শুধু সহবাসের সম্পর্ক অনেক বেটার। অন্তত ঝাড়া হাত-পা থেকে ভাল মতো বাঁচা যায়’-স্পষ্ট জানিয়েছে পাবলিক রিলেশনকর্মী অনুক্তা গুপ্ত। সুত্র :এবিপি।
Leave a comment