• hi

মমির রহস্য

hi

মমির নাম শুনলে প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কফিনের ভেতর ব্যান্ডেজে মোড়া কোনো মানুষের মৃতদেহ। মিসরীয় মমিগুলোই সবচেয়ে বিখ্যাত, তবে পৃথিবীর আরো অনেক জায়গায়ই মমির খোঁজ পাওয়া গেছে।
যে মমি নিয়ে দুনিয়াজোড়া এত মাতামাতি, সেই মমি আসলে বানানো হয় কিভাবে, তা নিয়েও কৌতূহল অনেক। প্রথমে মৃতদেহকে রাসায়নিক দ্রব্যে ডুবিয়ে কিংবা অত্যধিক ঠাণ্ডা বা গরম এবং কম আর্দ্রতাপূর্ণ বা বায়ুহীন কোনো জায়গায় রেখে দেওয়া হতো। মৃতের শরীর থেকে আর্দ্রতা সরানোর জন্য ব্যবহার করা হতো লবণজাতীয় পদার্থ। এমনই একটি পদার্থ হলো ন্যাট্রন, যা মমি করার ক্ষেত্রে বিপুলভাবে ব্যবহৃত হতো। ন্যাট্রনের বৈশিষ্ট্য হলো, এটি মরুর গরম বালুর চেয়ে দ্রুত শরীরকে শুকিয়ে ফেলত। মৃতদেহটি শুকানোর পর বিভিন্ন ধর্মীয় রীতি অনুসারে তেল আর সুগন্ধি দেওয়া হতো। এরপর মৃতদেহটি সাদা লিনেন কাপড়ে এবং তারপর ক্যানভাসের টুকরায় ভালো করে মোড়োনো হতো। সেই সঙ্গে খারাপ কোনো শক্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য এসব কাপড় আর মমির গায়ে লেখা হতো জাদুমন্ত্র। ধারণা করা হতো, এসব মন্ত্র মৃতের পরবর্তী জীবনে বয়ে আনবে সৌভাগ্যের বার্তা। মমি করার প্রক্রিয়াটি যদি ঠিকমতো করা সম্ভব হয়, তাহলে মৃতদেহটি জীবদ্দশায় কেমন ছিল দেখতে, সেটিও বলে দেওয়া সম্ভব। শেষে এটি রাখা হতো পাথরের তৈরি শবাধারে।
প্রাচীন মিসরীয়রা বিশ্বাস করত, মৃত্যুর পরের জীবনে নিরাপদে প্রবেশ করার একটি মাধ্যম হলো ঠিকভাবে মমি করা। সে সময় মমি করার প্রক্রিয়াটি ছিল অনেক দীর্ঘ আর ব্যয়বহুল। আর তাই যাঁরা উচ্চপদের নাগরিক, যাজক কিংবা ফারাও আর তাঁর রানির আশীর্বাদপুষ্ট, তাঁরাই কেবল মৃত্যুর পর মমি হওয়ার সুযোগ পেত। মমি তৈরির প্রক্রিয়াটি শেষ হতে লেগে যেত প্রায় ৭০ দিন। এভাবে তিন হাজার বছর ধরে বানানো হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি মমি। বেশির ভাগ মমি ঠিকমতো সংরক্ষণের অভাব আর কবরচোরের কবলে পড়ে হারিয়ে যায়। কেবল ফারাও আর তাঁদের স্বজনদের মমিগুলো টিকে আছে। শুধু মানুষের মমিই নয়, ১০ লাখের বেশি পশুর মমিও পাওয়া গেছে মিসরে, যার বেশির ভাগই ছিল বিড়াল। চীনে পাওয়া গেছে হাজারের বেশি মমি।
প্রাচীন মিসরের বিখ্যাত মমিগুলোর মধ্যে তুতেনখামেন আর রেমেসিস দ্বিতীয়র মমি উল্লেখযোগ্য। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাচীন মিসরীয় মমিটি সাড়ে পাঁচ হাজার বছরের পুরনো। এর ডাকনাম জিনজার, যেটি বর্তমানে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হচ্ছে। এটি মরুভূমির তপ্ত বালুর নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মমির অভিশাপ নিয়েও অনেক কাহিনী শোনা যায়। তবে সেসবের কতটুকু সত্য আর কতটুকু কাল্পনিক, তার হিসাব মেলানো ভার।

ফেসবুকে আমি

 


Leave a comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।


*


hi
online partners namaj.info bd news update 24 Add

Read previous post:
মমির অভিশাপ

 ‘মমি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে তুমি হয়তো বিপুল ধনরত্ন পাবে৷ বিরাট ধনীও হয়ে যেতে পারো৷ তবে দুর্ভাগ্য তোমার পিছন ছাড়বে না৷...

Close