নারী-পুরুষের আবেগীয় পার্থক্য
দীর্ঘদিনের একটা সম্পর্ক ভেঙে গেল, সেক্ষেত্রে দেখা যায় মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বুক ভাসিয়ে দিচ্ছে। অথচ পুরুষটি কাঁদছে না। সে তার কষ্টগুলো নিরবে সয়ে যাচ্ছে। শুধু সম্পর্কের ক্ষেত্রেই নয় যে কোন ক্ষেত্রেই। পুরুষরা তাদের আবেগ ছিন্নভাবে প্রকাশ করে। এতে হয়ত নারীরা তাদেরকে ভুলও বুঝে থাকেন। অথচ নারীরা আবেগীয়ভাবে অনেকটাই দুর্বল প্রকৃতির হয়ে থাকেন। তাদ্র কষ্টগুলো তারা প্রকাশ করেন কেঁদে বুক ভাসিয়ে কিংবা অন্য কোনভাবে। নারীদের ক্ষেত্রে ধরা যাক তাদের ঈর্ষার দিকটি। নারীরা খুব ঈর্ষাপরায়ন হয়ে থাকেন। এক নারী আবার আরেক নারীর প্রতি বেশি ঈর্ষাণ্বিত হয়ে অনেক কিছু করে থাকেন।
‘তুমি কখনো আমার কথা শোন না’, ‘তুমি কখনও আমাকে সময় দাও না’—এগুলো একজন নারীর সবচেয়ে প্রিয় সংলাপ। অন্যদিকে একজন পুরুষকে প্রায়ই বলতে শোনা যায়, ‘আমি এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই না’, ‘আচ্ছা আমরা কি এই বিষয়টা বাদ দিতে পারি না?’—এ জাতীয় কথা পুরুষকে প্রায়ই বলতে শোনা যায়।
নারী-পুরুষের এই আবেগীয় পার্থক্য তাদের একে অপরকে বেশ নাড়া দেয়। পুরুষরা ভাবেন নারীরা কেন অল্প কিছুতেই এত ছিঁচ কাঁদুনে হয়, আর কেনই বা তারা ছোট ছোট বিষয়ে এতটা ঈর্ষাপরায়ণ হয়? অপর দিকে নারীরা ভাবে পুরুষরা এমন কেন হয়? আমরা কেঁদে কেঁদে অস্থির অথচ তারা কত নিষ্ঠুর। পুরুষদের চোখে পানি কেন আসেনা সহজে?
এসব জানতে হলে বুঝতে হবে নারী-পুরুষের মনের গভীর অবস্থাকে। সব মানুষের ভিতরেই আসলে গভীর আবেগ কাজ করে। অথচ জন্মগতভাবেই তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন। পুরুষরা তাদের আবেগ কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে বলে এর মানে এই নয় যে, তাদের আবেগ কম। স্বামীরা দাম্পত্য জীবনের নানা ঝামেলা, দুর্দশা ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারেন, অনেক চাপ নিতে তাঁরা অভ্যস্ত। এ ছাড়া স্ত্রীর কাজে সাহায্যও করে থাকেন।
মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, একজন পুরুষের জীবনে আবেগ সরাসরি কাজ করে না। আর নারীদের মাঝে আগাগোড়াই আবেগ কাজ করে। কিরণ নায়ার নামের একজন মনস্তত্ত্ববিদ বলেন, ‘মানুষের মস্তিষ্কের বাম অংশে থাকে যুক্তি আর আবেগের অবস্থান থাকে ডানে। পুরুষের চেয়ে নারীরা তাদের মস্তিষ্কের বাম ও ডান অংশের সাথে খুব ভালো যোগাযোগ রাখতে পারে।’ বিখ্যাত লেখক খুশবন্ত সিং তাঁর ‘ওম্যান, সেক্স, লাভ অ্যান্ড লাস্ট’ গ্রন্থে চিরকাল ধরে চলমান নারী-পুরুষের এই দ্বন্দ্বের গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
Leave a comment